
আগেই বলে নিচ্ছি কেননা আপনারা পরে ভুলে যান। বাকি বন্ধুদের সাহায্যের উদ্দেশে লাইক আর শেয়ারটা মনে করে করে দেবেন। শুরু করছি আজকের বিষয় –
নমস্কার বন্ধুরা আমি শান্তনু আপনাদের সবাইকে আমার এই chalokolkata.com এ স্বাগতম। আশা করি সবাই আপনারা ভালোই আছেন আর সুস্থ আছেন। বন্ধুরা আজ আমি আমার সকল বন্ধুদের জানা অজানা সত্য ঘটনা একটু শেয়ার করতে চাই। ঘটনাটা সত্যি একবার হলেও আপনার চোখে জল আনবে। না না জল আনাটা আমার কাজ না। আমি চাই এই ঘটনা বা ছোট্ট একটা গল্পস্বরূপ আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।
রিক্সায় গেলে ভাড়া ২০ টাকা, আর অটোতে ১০ টাকা। তাই অটোর জন্যই দাঁড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু পাচ্ছিলাম না
পাশেই অনেকগুলো রিক্সা দাঁড় করানো।
তাদের মাঝে একজন বলল –
রিক্সাওয়ালা – দাদা যাবেন.? চলেন।
আমি- না।
রিক্সাওয়ালা- একটু অপেক্ষা করে আবার ডাক দিয়ে বলে দাদা চলেন।
আমি- (একটু বিরক্ত হয়ে) বল্লামনা যাব না।
রিক্সাওয়ালা – আপনি ১০ টাকাই দিয়েন। চলেন।
আমি – তাকিয়ে লোকটা কে একটু ভালোভাবে দেখলাম। খারাপ কিছু মনে হয় নি। তাই উঠে পড়লাম।
নামলাম, ভাড়া দিলাম, তারপর একটা দোকানে ঢুকে গিয়েছি। কিছুক্ষন পর বের হয়ে দেখি রাস্তার ঐ পাশে রিক্সাওয়ালা মামা টা। ফুল কিনছে… হাতে দুটো বিরিয়ানির প্যাকেট। আমি কেন জানি ওনার পাশে চলে গেলাম। গিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। উনি আমাকে দেখতে পেয়ে একটা হাসি দিলেন।
আমি- মামা ফুল কার জন্যে.?
রিক্সাওয়ালা- আপনার বৌদির জন্য । আজকে আমাদের বিবাহবার্ষিকী।
আজকে আর ভাড়া মারবো না,বাড়ি চলে যাবো ।
১৬০ টাকা লাগতো। আমার কাছে ১৫০ ছিল। তাই আপনাকে ১০ টাকা দিয়েইনিয়ে এসেছি ।
আমি- ধর্মপুর যাবেন.?
রিক্সাওয়ালা – না, আজকে আর ভাড়া মারবো না।।
আমি- আরে চলুন মামা, আপনাকে ১০ টাকা বেশী দেব। এটা বলেই আমি ওনার রিক্সায় বসে পড়েছি।
উনিও আর না করেন নি। নিয়ে এসেছেন ধর্মপুর।
আসার পথে।
আমি – আজকে শুধু ১৬০ টাকাই ভাড়া খেটেছেন.?
রিক্সাওয়ালা – না, আরো বেশি। মালিক রে টাকা দিতে হবে । ওইটা বাদ দিয়ে ১৬০ টাকা।
আমি- বৌদি কে কি প্রতি বছর ই ফুল দেন.?
রিক্সাওয়ালা – হ্যাঁ। ১২ বছর ধরে দেই। বছরে দু-বার। একদিন বিবাহবার্ষিকী তে । আরেক দিন হল এপ্রিল এর ২ তারিখ। ওইদিন আমার মেয়ে হয়েছিল। আমাদের প্রথম সন্তান। খালি বিয়ার ১ম বছরে দিতে পারিনি । তখন বেকার ছিলাম। হাতে কোনো কাজ ছিল না।
আমি- বয়স কত আপনার মেয়ের.?
রিক্সাওয়ালা – ৯ বছর।
রিক্সা থেকে নেমে ওনাকে ১০০ টাকার দুটো নোট দিয়ে বলেছি এটা দিয়ে ছোট দেখে একটা কেক ও নিয়ে যাবেন। দোকানদারকে বলবেন কেক এর ওপরে লিখে দিতে – ‘শুভ বিবাহবার্ষিকী।’
ওনি একদম চুপচাপ হয়ে অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়েছিল।
তার থেকেও বেশি অবাক ছিলাম আমি।
ওনার প্রত্যেকটা কথা অবাক হয়ে শুনছিলাম।
কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ মনে পড়লো আরে আমার ব্যাগে তো মোমবাতি আছে। ওনাকে একটা মোমবাতি দিলে ভালো হতো।
তারপর মনে হলো – ভালোই করেছি মোমবাতি না দিয়ে। মোমবাতি দিলে তো ওরা ঐটা ফু দিয়ে নিভিয়ে দিত। এই ভালোবাসা না নিভুক। এমন ভালোবাসা গুলো জ্বলতে থাকুক বারো বছর, চব্বিশ বছর, শত বছর, হাজার বছর ধরে।
অনেক কেই তো দেখি নিজের সন্তান এর জন্মদিন পালন করতে। কিন্তু সেই সন্তান কে যেই মা পৃথিবীতে এনেছে সেই মাকে সন্তানের প্রতি জন্মদিনে কয়জনই বা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়………………
সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো হয়তো এমনি হয়।
The post শিক্ষনীয় ছোট গল্প – আমি ও রিক্সাওয়ালা appeared first on Chalo Kolkata.