Quantcast
Channel: Chalo Kolkata
Viewing all articles
Browse latest Browse all 302

স্বচ্ছ ভারত অভিযান – Swachh Bharat Abhiyan Essay in Bengali

$
0
0

২০১৯ সালে যখন ভারত মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উৎযাপন করবে, তখন স্বচ্ছ ভারতই হবে তাঁর প্রতি আমাদের সেরা শ্রদ্ধার্ঘ্য”। ২০১৪ সালে ২ অক্টোবর নতুন দিল্লির রাজঘাটে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী একথা বলেন। এই অভিযান সারা দেশের সর্বত্র জাতীয় আন্দোলন হিসেবে সূচনা হয়েছে।

পরিচ্ছন্নতার এই গণআন্দোলনের নেতৃত্বে দিতে গিয়ে, প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর ভারতের যে স্বপ্ন গান্ধীজী দেখেছিলেন, তা পূরণ করার লক্ষ্যে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং দিল্লির মন্দির মার্গ থানা এলাকায় এই কর্মসূচির সূচনা করেন। আবর্জনা পরিস্কার করতে হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে এক গণআন্দোলনে পরিণত করার লক্ষ্যে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন – “নোংরা করবেন না, করতে দেবেন না”। তিনি মন্ত্রের মতো উচ্চারণ করেন – “না গন্দগি করেঙ্গে, না করনে দেঙ্গে’। শ্রী মোদী, ৯ জন নাগরিককে এই পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে সামিল হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এঁদের প্রত্যেককে এই আন্দোলনে আরও ৯ জন করে সামিল করানোর জন্যও তিনি অনুরোধ জানান।

এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের অনুরোধ স্বচ্ছতা অভিযান এক জাতীয় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত আন্দোলনের মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে এক ধরনের দায়িত্ববোধের সঞ্চার হয়েছে। সারা দেশ জুড়ে নাগরিকরা পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করায় ‘পরিচ্ছন্ন ভারত’-এর যে স্বপ্ন মহাত্মা গান্ধী দেখেছিলেন তা সফল হতে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা ও কাজের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভারতের বার্তা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছেন। স্বচ্ছতার এই উদ্যোগকে তিনি বারাণসী পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। পরিচ্ছন্ন ভারত মিশনে তিনি বারাণসীর গঙ্গার অসিঘাটে কোদাল হাতে নেমেছিলেন। বিরাট সংখ্যায় স্থানীয় মানুষ তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়ে স্বচ্ছতা অভিযানে সহযোগিতা করেন। পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী, ভারতীয় পরিবারগুলির বাড়িতে শৌচাগারের অভাবজনিত স্বাস্থ্য সমস্যাটিও একই সঙ্গে তুলে ধরেন।

সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ পরিচ্ছন্নতার গণআন্দোলনে এগিয়ে এসে যুক্ত হয়েছেন। এই মহান উদ্যোগে সরকারি কর্মকর্তা থেকে জওয়ান, বলিউডের অভিনেতা থেকে ক্রীড়াবিদ, শিল্পপতি থেকে ধর্মীয় নেতা সকলেই যুক্ত হয়েছেন। সারা দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, অসরকারি সংগঠন এবং স্থানীয় গোষ্ঠীগুলি কেন্দ্রের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে যুক্ত হয়েছেন। সারা দেশ জুড়ে ঘন ঘন পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে প্রচার কর্মসূচিতে নাটক ও সঙ্গীতের মাধ্যমে ব্যাপক ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রচার সংগঠিত হচ্ছে।

বলিউডের খ্যাতনামা চিত্রতারকা থেকে শুরু করে টেলিভিশনের অভিনেতারা এগিয়ে এসে এই পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, কৈলাশ খের, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরা এবং ‘সব’ টিভির জনপ্রিয় শো ‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’র সমস্ত অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কর্মী স্বচ্ছ ভারত অভিযানে হাত লাগিয়েছেন। শচীন তেন্ডুলকর, সানিয়া মির্জা, সাইনা নেহওয়াল এবং মেরীকমের মতো বহু বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের স্বচ্ছ ভারত অভিযানে অবদান বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মাসিক বেতার ভাষণ ‘মন কী বাত’-এও স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে সফল করতে বারে বারে সারা দেশের বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রদেশের হার্দা জেলার একদল সরকারি কর্মী পরিচ্ছন্ন ভারতের লক্ষ্যে যে উদ্যোগ নিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানে তার প্রশংসা করেছেন। ব্যাঙ্গালোরের নিউ হোরাইজন স্কুলের ৫ জন ছাত্র যেভাবে বর্জ্য পদার্থ কেনা-বেচার জন্য মোবাইল-ভিত্তিক অ্যাপ তৈরি করেছে তারও প্রশংসা করেছেন।

আই সি আই সি আই ব্যাঙ্ক, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, জামশেদপুরের এক্স এল আর আই এবং আই আই এম – ব্যাঙ্গালোরের গণপরিচ্ছন্নতা উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা প্রসারের কাজ করেছে। শ্রী নরেন্দ্র মোদী সর্ব্দাঈ মুক্তকন্ঠে সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই উদ্যোগে মানুষের অংশগ্রহণকে প্রশংসা করেছেন। বারাণসীতে ‘মিশন প্রভুঘাট’ নামে পরিচ্ছন্নতার অভিযান চালানোর জন্য তেমসুতুলা ইমসং, দায়শিকা শাহ্‌ এবং একদল স্বেচ্ছাসেবীর কাজের প্রশংসা করেছেন।

সারা দেশে নাগরিকরা যেসব পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন, তা তুলে ধরতে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসেবে #MycleanIndia নামে একটি পোর্টালও চালু করা হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযান জনগণের বিপুল সমর্থনে এক ‘জনআন্দোলন’-এ পরিণত হয়েছে। নাগরিকরাও পরিচ্ছন্ন ভারতের শপথে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিরাট সংখ্যায় এই অভিযানে যুক্ত হয়েছেন। স্বচ্ছ ভারত অভিযান কর্মসূচির সূচনা হওয়ার পর ঝাড়ু হাতে রাস্তা পরিস্কার, আবর্জনা পরিষ্কার, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি নজর এবং নির্মল পরিবেশ বজায় রাখার কাজ যেন মানুষের সাধারণ রুটিনে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ এই কাজে অংশ নিচ্ছেন এবং ‘পরিচ্ছন্নতাই পবিত্রতা’র বার্তা ছড়িয়ে দিতে এগিয়ে আসছেন।

পুর এলাকায়, স্বচ্ছ ভারত অভিযানে ব্যক্তিগত শৌচাগার, গোষ্ঠী শৌচাগার নির্মাণ ও কঠিন বর্জ্য পরিচালন ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়। গ্রামাঞ্চলে আবার মানুষের ব্যবহারিক আচরণ বদলানোর লক্ষ্যে মুখোমুখী কথাবার্তার মাধ্যমে মানুষকে বোঝানোর কাজ চলছে। এছাড়া, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত প্রকল্প রূপায়ণ ও পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থাকে জোরদার করা হয়ে …… রাজ্যগুলিকে স্থানীয় সংস্কৃতি, প্রথা, চাহিদা ও দাবিদাওয়ার কথা মাথায় রেখে নিজস্ব ধরনের পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থা তৈরি করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। শৌচাগার নির্মাণের জন্য উৎসাহ প্রদান বাবদ অর্থ সাহায্যের পরিমাণ ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কঠিন ও তরল বর্জ্য পরিচালনের জন্যও অর্থ প্রদান করা হচ্ছে।

শেষ কথা 

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ঘোষণা করেন এবং ঐ বছর ২রা অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। এই দিন নূতন দিল্লির রাজঘাট সমাধি পরিসরে আয়োজিত একটি জনসভায় তাঁর ভাষণে তিনি দেশের জনগণকে এই প্রকল্পে সামিল হওয়ার জন্য আবেদন করেন। পরে সেই দিনই তিনি মন্দির মার্গ পুলিশ স্টেশনের একটি গাড়ী রাখার স্থান এবং কনট প্লেসের নিকটে বাল্মীকি বস্তি পরিষ্কার করার কাজে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়প্রতি ভারতীয়কে বছরে একশত ঘন্টা এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় করার অনুরোধ জানান।

The post স্বচ্ছ ভারত অভিযান – Swachh Bharat Abhiyan Essay in Bengali appeared first on Chalo Kolkata.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 302

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>