Quantcast
Channel: Chalo Kolkata
Viewing all articles
Browse latest Browse all 302

আমার দেশ রচনা ও অনুচ্ছেদ – My Country Essay & Paragraph

$
0
0

ভূমিকা

“ভারত আমার ভারতবর্ষ, স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো, তোমাতে আমরা লভিয়া জনম, ধন্য হয়েছি ধন্য গো।” —- শিল্পী মান্না দে’র কন্ঠের এই বিখ্যাত গানটি দেশমাতৃকার চরণে অর্পিত হয়েছে যেন।  সুজলা – সুফলা – শস্যশ্যামলা আমাদের দেশ ভারতবর্ষ পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম মহাদেশ এশিয়ার অন্তর্গত। ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল তথা বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সংবিধান অনুযায়ী ভারত সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম হল তাজমহল, যা আমাদের দেশে অবস্থিত।

ভৌগোলিক অবস্থান

নদীমাতৃক দেশ ভারত। ভারতের প্রধান নদী গঙ্গা। ভারতের মত স্থানবৈচিত্র্য পৃথিবীর আর কোথাও নেই। উত্তর ও উত্তর পূর্ব জুড়ে বিস্তৃত পৃথিবীর উচ্চতম হিমালয় পর্বত যেন অতন্দ্র প্রহরীর মতো ঘিরে রেখেছে ভারতকে। পূর্ব -দক্ষিণ -পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে বিরাজ করছে সমুদ্র। আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর বেষ্টিত ভারতের নিরাপত্তা সুরক্ষিত প্রাকৃতিক ভাবেই। সুন্দরবন বনভূমি, গাঙ্গেয় সমতলভূমি, দাক্ষিণাত্যের মালভূমি, এমনকি থর মরুভূমি প্রভৃতি ভারতে অবস্থিত। আরাবল্লী পর্বতশ্রেণি, পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, দ্বীপ-উপদ্বীপ, গিরিপথ সম্বলিত ভারতের মতো পৃথিবীর আর অন্য কোনো দেশে একসাথে এত ভূমিবৈচিত্র্য নেই। তাইতো দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বলেছেন,

“এতো স্নিগ্ধ নদী তাহার, কোথায় এমন ধূম্র পাহাড়,

কোথায় এমন হরিৎ ক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে,

এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায়, বাতাস তাহার দেশে।”

ভারতে বর্তমানে ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল ও ভূটান, পূর্বে বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা এই সকল দেশ, দ্বীপ, রাজ্য হল ভারতের সীমান্তে অবস্থিত প্রতিবেশী।

ইতিহাস

কথিত আছে, ভারত নামটির উৎপত্তি চন্দ্রবংশীয় পৌরাণিক রাজা ভরতের নামানুসারে। জানা যায়, এই ‘বর্ষ’ বা অঞ্চলটি রাজা ভরতকে দান করা হয়েছিল বলে এর নাম ভারতবর্ষ। ইংরজিতে ইন্ডিয়া (India) শব্দটি এসেছে সিন্ধু নদের আদি ফার্সি নাম হিন্দু থেকে। এছাড়াও প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের ইন্দোই অর্থাৎ ইন্দাস (সিন্ধু) নদী অববাহিকার অধিবাসী নামে অভিহিত করতেন। স্বাধীনতার পর ভারতের সংবিধানে ও লোকমুখে ভারত নামটিই প্রচলিত হয়।

ভারতীয় সভ্যতা আনুমানিক পাঁচহাজার বছরের পুরোনো। এই সিন্ধু নদের তীরেই প্রথম ‘সিন্ধু সভ্যতা’ গড়ে ওঠে। এরপর বহিরাগত আর্যজাতির আক্রমণে বৈদিক সভ্যতার প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে বহু রাজা-মহারাজা-সম্রাটরা রাজত্ব করেন এ দেশে। ভারত তখন ব্যবসা – বাণিজ্য – ধনসম্পদে বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হত। মশলার বৈচিত্র্যের জন্য আজও বিখ্যাত ভারত।

ষোড়শ শতক থেকে বিভিন্ন বিদেশী শক্তিগুলি ভারতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে। পরবর্তীকালে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক গোলযোগের সুযোগ নিয়ে তারা ভারতে উপনিবেশ স্থাপন করতেও সক্ষম হয়। ১৮৫৬ সালের মধ্যেই ভারতের অধিকাংশ অঞ্চল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হস্তগত হয়েছিল। এরপর দুশো বছরের প্রচেষ্টা, একের পর এক ব্যর্থ বিদ্রোহে, যুদ্ধে, নরম-চরম পন্থায় ভারতবাসী ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।

জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্য

ভারতের প্রধান চারটি ঋতু হল- শীত (জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি), গ্রীষ্ম (মার্চ থেকে মে), বর্ষা (জুন থেকে সেপ্টেম্বর), এবং শরৎ ও হেমন্ত (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর)। কর্কটক্রান্তি রেখা ভারতের মাঝবরাবর প্রসারিত। হিমালয় পর্বতমালা ও থর মরুভূমি দেশে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ ও ক্রান্তীয় জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে বর্তমানে বিশ্ব উষ্ণায়ণের ফলে ভারতের জলবায়ুতে বিভিন্ন জটিলতা দেখা যাচ্ছে।

ভারতের অনেক অঞ্চলেই স্বাভাবিক উদ্ভিদের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। উল্লেখযোগ্য দেশীয় প্রাণী হল নীলগিরি লেঙ্গুর, পশ্চিমঘাট পর্বতমালার বাদামি ও গাঢ় লাল রঙের বেডোমি ব্যাঙ। ভারতে বহু লুপ্তপ্রায় প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এশীয় সিংহ, বাংলা বাঘ, ভারতীয় শ্বেতপৃষ্ঠ শকুন (বর্তমানে প্রায় লুপ্তপ্রায়)। পূর্বে বন্যপ্রাণীর যথেচ্ছ শিকার রুখতে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন ও প্রকল্প চালু করা হয়। বর্তমানে ভারতে অভয়ারণ্যের সংখ্যা পাঁচশোর অধিক। এছাড়াও ১৩টি জৈবক্ষেত্র সংরক্ষণ করা হয়।

ভারতের কৃষি

ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। এখানকার অধিকাংশ মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি। বর্তমানে ভারত কৃষি উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী। দুধ, কাজুবাদাম, নারকেল, চা, আদা, হরিদ্রা ও কালো মরিচ উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে প্রথম, কফি উৎপাদনে ভারতের স্থান ষষ্ঠ। গবাদি পশুর সংখ্যার হিসেবে ভারতের স্থান পৃথিবীতে প্রথম।

ভারতের শিল্প

ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমশক্তির দেশ। এই শক্তির অধিকাংশ কৃষি ও কৃষিসংক্রান্ত শিল্পগুলিতে নিযুক্ত। বাকি শ্রমশক্তির কিছু পরিষেবা ও পরিষেবা-সংক্রান্ত শিল্পে এবং কিছু নিযুক্ত শিল্পখাতে। প্রধান কৃষিজ ফসলগুলি হল ধান, গম, তৈলবীজ, তুলা, পাট, চা, আখ ও আলু। প্রধান শিল্পগুলি হল অটোমোবাইল, সিমেন্ট, রাসায়নিক, বৈদ্যুতিন ভোগ্যপণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, যন্ত্রশিল্প, খনি, পেট্রোলিয়াম, ভেষজ, ইস্পাত, পরিবহণ উপকরণ ও বস্ত্রশিল্প। ভারতের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি হল আবাদি জমি, বক্সাইট, ক্রোমাইট, কয়লা, হিরে, আকরিক লৌহ, চুনাপাথর, ম্যাঙ্গানিজ, অভ্র, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম ও আকরিক টাইটানিয়াম।

ভারতের বহুসংখ্যক শিক্ষিত ইংরেজি-পটু পেশাদাররা বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা, মেডিক্যাল ট্যুরিজমে ও আউটসোর্সিং-এর কাজে যুক্ত হয়েছেন। বর্তমানে ভারত সফটওয়্যার ও অর্থসংক্রান্ত, গবেষণাসংক্রান্ত পরিষেবার এক বৃহৎ রপ্তানিকারক। এছাড়াও ভারতের প্রধান রপ্তানি পণ্য হল বস্ত্র, রত্ন, ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্যাদি ও সফটওয়্যার। আমদানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত তেল, যন্ত্রপাতি, সার ও রাসায়নিক দ্রব্য। ভারতের প্রধানতম বাণিজ্য সহযোগী হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন।

ভারতের সংস্কৃতি

ভারত ধর্মনিরপেক্ষ বহু জাতির দেশ। বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ এখানে বাস করেন। ভারতের ভাষা, ধর্মবিশ্বাস, নৃত্যকলা, সংগীত, স্থাপত্যশৈলী, খাদ্যাভ্যাস ও পোষাকপরিচ্ছদ ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন রকমের। এই সবের মধ্যে একটি সাধারণ ঐক্য পরিলক্ষিত হয়। ভারতকে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য  বলা হয়। কোনো কোনো ঐতিহাসিক এই সভ্যতাটিকে “বিশ্বের প্রাচীনতম জীবন্ত সভ্যতা” মনে করেন।

ভারত রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুলের মতো সাহিত্যিক, সত্যজিত রায়ের মতো চিত্রপরিচালককে সংষ্কৃতির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পেয়েছে। গুলজার তাঁর শব্দের জাদুতে, এ আর রহমান তাঁর কথা ও সুরের আবেশে, অপর্ণা সেন তাঁর চিত্র পরিচালনায় এখনও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য কাজ করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতে প্রথম নোবেল পুরষ্কার (১৯১৩) আনেন, “গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থ রচনা করে।

বিবিধ

“বিবিধের মাঝে মিলন মহান” এই পরিস্থিতি ভারতে দেখা যায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভারত তার নিজস্ব স্বাক্ষর রেখে এসেছে। কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিকতাবাদ প্রস্তাবনার হাজার বছর আগেই ভারতীয় গণিতবিদ তথা জ্যোতির্বিদ আর্যভট্ট প্রাচীন ভুল ধারণার প্রমাণ দিয়েছিলেন। ভারতীয় গণিতজ্ঞ শ্রীনিবাস রামানুজন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদদের অন্যতম বলে বিবেচিত হন। ১৯২৮ পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন ভারতীয় পদার্থবিদ চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন। ২০০৩ ভারতের প্রথম সুপারকম্পিউটার পরম পদ্ম তৈরি করে। এটি পৃথিবীর দ্রুততম সুপারকম্পিউটারগুলির অন্যতম।

ভারতের জাতীয় খেলা ফিল্ড হকি। ভারতীয় হকি দল হকি বিশ্বকাপ ও একাধিক অলিম্পিক মেডেল বিজয়ী। যদিও ভারতে সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা হল ক্রিকেট। ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দল ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ, ২০০৭ সালের আইসিসি বিশ্ব টোয়েন্টি-২০ এবং ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ বিজয়ী। ভারতের আভ্যন্তরীণ ক্রিকেট প্রতিযোগিতাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রনজি ট্রফি, দলীপ ট্রফি, দেওধর ট্রফি, ইরানি ট্রফি ও চ্যালেঞ্জার সিরিজ। আমাদের দেশের জাতীয় ফুটবল দল বহুবার সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন কাপ জিতেছে। দাবা খেলার আবিষ্কার হয়েছিল ভারতে। এছাড়াও অন্যান্য জনপ্রিয় খেলাগুলি হল কাবাডি, খো খো, গুলি ডান্ডা ইত্যাদি। প্রাচীন যোগব্যায়াম এবং বিভিন্ন ভারতীয় মার্শাল আর্ট, ইত্যাদি জনপ্রিয়। ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক ক্রীড়া পুরস্কার হল রাজীব গান্ধী খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কার (খেলোয়াড়দের জন্য) এব দ্রোণাচার্য পুরস্কার (কোচিং-এর জন্য)।

উপসংহার

ভারতের বিচিত্রতা দেখে রবীন্দনাথ বলেছিলেন, “হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন / শক-হুন-দল পাঠান-মোগল এক দেহে হল লীন।” প্রাচীনকাল থেকেই ভারত সবদিক দিয়ে সৃজনশীল দেশ। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-খেলাধূলা-জীবিকা-শিল্প-সংষ্কৃতি-অর্থনীতিতে আজও আমরা আমাদের ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছি। মান্না দে’র সেই গানটা দিয়েই শেষে বলি,

“রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ

বীর সুভাষের মহান দেশ

নাহি তো ভাবনা, করি না চিন্তা

হৃদয়ে নাহি তো ভয়ের লেশ ||”

 

আমার দেশ : অনুচ্ছেদ

ভারত কৃষিপ্রধান নদীমাতৃক দেশ। সুজলা – সুফলা – শস্যশ্যামলা আমাদের দেশ ভারতবর্ষ ভৌগোলিক আয়তনের বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। অন্যদিকে জনসংখ্যার বিচারে এই দেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল তথা বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সংবিধান অনুযায়ী ভারত সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কথিত আছে, ভারত নামটির উৎপত্তি চন্দ্রবংশীয় পৌরাণিক রাজা ভরতের নামানুসারে। ভারতীয় সভ্যতা আনুমানিক পাঁচহাজার বছরের পুরোনো। বিভিন্ন সভ্যতা, যুগ, রাজা-মহারাজ-সম্রাটদের শাসন সৃষ্টি ও ধ্বংসের নীতিতে এগিয়ে চলেছে। মধ্যযুগের পরে ভারত দুশো বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে পরাধীনতার সঙ্গে যুদ্ধ করে ১৯৪৭ এর ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে, প্রতিষ্ঠা হয় গণতন্ত্র। ভারতের প্রধান নদী গঙ্গা। উত্তর ও উত্তর পূর্ব জুড়ে বিস্তৃত পৃথিবীর উচ্চতম হিমালয় পর্বত আর পূর্ব -দক্ষিণ -পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে বিরাজ করছে সমুদ্র। ভূমিবৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ ভারতে বর্তমানে ২৯টি রাজ্য ও ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। হিমালয় পর্বতমালা ও থর মরুভূমি ভারতীয় জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। ভারতের প্রধান চারটি ঋতু হল- শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, এবং শরৎ ও হেমন্ত। ভূমিবৈচিত্র্য ও জলবায়ুর প্রভাবে  ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ, বিভিন্ন প্রাণির সমারোহ দেখা যায়। বর্তমানে ভারত কৃষি উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী। গবাদি পশুর সংখ্যার হিসেবে ভারতের স্থান পৃথিবীতে প্রথম। কৃষিপ্রধান দেশ হলেও শিল্পে পিছিয়ে নেই আমাদের দেশ। ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমশক্তির দেশ। খেলাধূলা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি কোনও কিছুতেই পিছিয়ে নেই আমাদের দেশ। বর্তমানে ভারত সফটওয়্যার ও অর্থসংক্রান্ত, গবেষণাসংক্রান্ত পরিষেবার এক বৃহৎ রপ্তানিকারক। ভারতের ভাষা, ধর্মবিশ্বাস, নৃত্যকলা, সংগীত, স্থাপত্যশৈলী, খাদ্যাভ্যাস ও পোষাকপরিচ্ছদ ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন রকমের। এই সবের মধ্যে ঐক্যের মূল সুর পরিলক্ষিত হয়। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য -ই ভারতের বৈশিষ্ট্য। ভারতবর্ষ “রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ/ বীর সুভাষের মহান দেশ”। এদেশে গুলজার তাঁর শব্দের জাদুতে, এ আর রহমান তাঁর কথা ও সুরের আবেশে, অপর্ণা সেন তাঁর চিত্র পরিচালনায় এমন আরও অনেকে এখনও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য কাজ করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতে প্রথম নোবেল পুরষ্কার (১৯১৩) আনেন,অন্যদিকে সত্যজিত রায় অস্কার পেয়েছেন। ভারতে তাজমহল অবস্থিত, যা পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম। ভারতবর্ষ “বিবিধের মাঝে মিলন মহান” এই মহান আদর্শে ব্রতী দেশ। প্রাচীনকাল থেকেই ভারত সবদিক দিয়ে সৃজনশীল দেশ। কোনো কোনো ঐতিহাসিক এই সভ্যতাটিকে “বিশ্বের প্রাচীনতম জীবন্ত সভ্যতা” মনে করেন। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-খেলাধূলা-জীবিকা-শিল্প-সংষ্কৃতি-অর্থনীতিতে আজও আমরা আমাদের ঐতিহ্য বজায় রেখে চলেছি। শিল্পী মান্না দে’র কন্ঠের সেই বিখ্যাত গানটা দিয়েই শেষে বলি, “ভারত আমার ভারতবর্ষ, স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো, তোমাতে আমরা লভিয়া জনম, ধন্য হয়েছি ধন্য গো।”

The post আমার দেশ রচনা ও অনুচ্ছেদ – My Country Essay & Paragraph appeared first on Chalo Kolkata.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 302

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>